Sunday, December 25, 2011

জননেতা আব্দুর রাজ্জাক এমপির মত্যৃতে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের গভীর শোক প্রকাশ

জননেতা আব্দুর রাজ্জাক এমপির মত্যৃতে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের গভীর শোক প্রকাশ
২৪ ডিসেম্বর ২০১১, ১০ পৌষ ১৪১৮
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বর্ষীয়ান জননেতা, বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত সহযোগী, সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য আবদুর রাজ্জাক এমপি আর নেই। লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৪৬ মিনিটে (লন্ডন সময় বিকেল ৩টা ৪৬ মিনিটে) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। আবদুর রাজ্জাকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার রাতে এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী দেশের রাজনীতিতে আবদুর রাজ্জাকের অসামান্য অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘তার মৃত্যুতে জাতি একজন নিষ্ঠাবান রাজনীতিক ও বঙ্গবন্ধুর অনুসারীকে হারালো।’  প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবদুর রাজ্জাক ছাত্রজীবন থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামে বিশাল ভূমিকা পালন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গতিশীল ও দক্ষ নেতৃত্বের মাধ্যমে আবদুর রাজ্জাক জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছেন।                                     (আবদুর রাজ্জাকের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন)
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায়ই বাঁচার আর কোনো আশা না থাকায় স্ত্রী ফরিদা রাজ্জাক চিকিৎসকদের অনুরোধ করেছিলেন একজন মৌলভী ডেকে তওবা পড়ানোর পরই লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়ার জন্য। পরে তার শয্যাপাশে কোরআন তেলাওয়াতও শুরু হয়। লন্ডন সময় বিকেল ৩টা ৪৬ মিনিটে আবদুর রাজ্জাকের মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসকরা ভেন্টিলেশন সিস্টেম খুলে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণা করেন তাকে। 
তিনি স্ত্রী ফরিদা রাজ্জাক, দুই ছেলে নাহিম রাজ্জাক ও ফাহিম রাজ্জাক, পুত্রবধূ মালিহা হোসাইন ও একমাত্র নাতি চায়াফ এমডি রাজ্জাকসহ বহু আত্মীয়স্বজন, রাজনৈতিক সহকর্মী ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আবদুর রাজ্জাকের মৃত্যুতে রাজনৈতিকসহ সর্বমহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতাসহ তার রাজনৈতিক সহকর্মী, আত্মীয়স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী ও সর্বস্তরের মানুষ রাজধানীর গুলশানের তার বাসায় ছুটে যান। আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন রাতেই ওই বাসায় গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তার নিজ এলাকা শরীয়তপুরেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আবদুর রাজ্জাকের মরদেহ বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটযোগে আগামীকাল রোববার সকালে দেশে আনা হবে। বিমানের একটি ফ্লাইট আজ শনিবার সকালে লন্ডনে যাবে এবং লন্ডন সময় বিকেল ৫টায় মরদেহ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে।
এর আগে আবদুর রাজ্জাক দীর্ঘদিন থেকেই কিডনি, লিভার ও ফুসফুসের জটিলতাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। সাবেক এই মন্ত্রী দেশ-বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাও নিয়েছেন। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় গত সেপ্টেম্বর মাসে লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। তার দেহে লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য ১১ ডিসেম্বর দিন ঠিক হলেও পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, তার কিডনিও প্রতিস্থাপন করতে হবে। তারা দুটি অঙ্গই এক সঙ্গে প্রতিস্থাপন করার পক্ষে মত দেওয়ায় অস্ত্রোপচার পিছিয়ে যায়। এ অবস্থায় শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে তাকে ওই হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। গত তিনদিন ধরে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাকে।
শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানান, আবদুর রাজ্জাকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতেই শরীয়তপুরের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মীরা শোকে মাতম করতে থাকেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী-সমর্থক এবং তার ভক্ত-অনুরাগীরাও।
তার জন্মস্থান ডামুড্যায় তার পৈতৃক বাড়িতেও শোকের মাতম চলছে। রাজনৈতিক সহকর্মী ও সহমর্মীদের অনেকেই ছুটে যান এ বাড়িতে। তার নির্বাচনী এলাকা ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট উপজেলা সদরের সব দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে শোক প্রকাশ করেন স্থানীয়রা।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, স্পিকার আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট, ডেপুটি স্পিকার কর্নেল (অব.) শওকত আলী, আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম, এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মলি্লক, জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক এমপি, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. অসীত বরণ রায়, যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জয়বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট সভাপতি সালাউদ্দীন বাদল, সাধারণ সম্পাদক শেখ আবদুল কাদের, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, নিউইয়র্ক সিটি আওয়ামী লীগ সভাপতি নূরুন্নবী, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ সভাপতি মিসবাহ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আলম, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান সরদার, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগ সভাপতি জেড আলম জয়, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জেলা পরিষদের প্রশাসক ডা. মোখলেসুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, মহানগর আওয়ামী লীগ আহ্বায়ক সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরন, সাংসদ তালুকদার মোঃ ইউনুস, মনিরুল হাসান খান, অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম, শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুর রব মুন্সি, সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, জেলা পরিষদের প্রশাসক মাস্টার মজিবুর রহমান, জেলা যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক নুহুন মাদবর, ভেদরগঞ্জ পৌর মেয়র মান্নান হাওলাদার, ডামুড্যা পৌর মেয়র হুমায়ুন কবির বাচ্চু ছৈয়াল, উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন মাঝি, ভেদরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির মোল্লা, গোসাইরহাট উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, নড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব বেপারী, পৌর মেয়র হায়দার আলী, জাজিরা উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন, পৌর মেয়র আবুল খায়ের ফকির, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ভবেশ্বর রোয়াজা নিকি, শরীয়তপুর সাহিত্য একাডেমী সভাপতি মফিজুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি যতীন্দ্রলাল ত্রিপুরা এমপি, সহ-সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা, সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলম, খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র রফিকুল আলম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শানে আলম এবং জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম।

No comments:

Post a Comment